বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১১

দিনাতিপাত-৬

মানুষ জীবনে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ধরা খায়, এবং ধরা খেয়ে আবার ধরা খাওয়া পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসে। আমিও এর ব্যতিক্রম না, তবে আমি সবসময় কিছু গচ্ছা দিয়েই বের হয়ে আসি। এই যেমন এই মেলবোর্নে এসে আজকে দ্বিতীয়বারের মতো ধরা খেলাম। প্রথম খেয়েছি বাসা ভাড়া ২ সপ্তাহের বেশি দিয়ে, ভাড়া করা বাসায় না থেকেই। কারেন্ট-গ্যাসের সংযোগ না থাকায় বাসায় না উঠে বন্ধুর বাসায় ছিলাম এবং সময়ক্ষেপন না করে ভাড়াটিয়া/বাড়ির দালাল (ভদ্র ভাষায় এদেরকে রিয়েল এস্টেট বলতে ভাল লাগে না) –দের জানানোর পরেও যখন তারা দু’সপ্তাহের পর বাসায় উঠার কয়েকদিন পর যখন চিঠি পাঠায় যে, গত দু’সপ্তাহ (যখন আমি থাকি নাই utility না থাকার কারনে)-এর বাসা ভাড়া দিতে। আমার তখন বিষম খাওয়া ছাড়া কোন উপায় ছিল না। অনেক প্রমান, অভিযোগ, উপযোগ করেও যখন বাড়ির মালিকদ্বয় মেনে নিল না, তখন এই ভীতু আমি ধরা খেলাম ভেবে, বাসা ভাড়ার নামে অনেকগুলো ডলার দিয়ে দিতে বাধ্য হলাম। মনে মনে ভাবলাম বড্ড বোকামি হয়ে গিয়েছিল যে, বাসায় কারেন্ট-গ্যাসের সংযোগ না দেখে – পরদিন গিয়েই বাসার চাবি দালালদেরকে ফেরত দিয়ে না আসা।

এবার পরিচিত একজন বুঝিয়ে বললো যে, আমি কেন concession –এ ট্রেন-বাস-ট্রাম এর টিকেট কাটি না, যেন আমার মতো বোকা আর কেঊ নাই এ ভূবনে। আমিও খুব বোকা বনে ভাবলাম, তাইতো medicare card আছে ওইটা দেখিয়েই বোধহয় কাটা যাবে কম পয়সার টিকেট; শুধু শুধু ডলারের শ্রাদ্ধ কে করে! অতি আনন্দের সাথে স্টেশন মাস্টারের কাছ থেকে টিকেট কাটলাম, এবং মনের খুশিতে কম পয়সার টিকেটে নিয়ে city অভিমুখে যাত্রা করলাম। যাত্রা শেষে টিকেট মেশিনে টিকেট ঢুকিয়ে বের হবার সাথে সাথে অপর পাশে দাড়িয়ে থাকা দুই টিকেট চেকার মামা আমাকে ডাক দিয়ে health card দেখাতে বলে; আমি বের করি medicare; বলে এইটা না হেলথ্‌ কার্ড। এইবার বিপদের তারতম্য আর কার্ডের পার্থক্য বুঝতে পারলাম একযোগে। মামাদের বুঝালাম যে, মামা ভুলে ভুল হয়ে গেছে, এইবার আমারে ছাইড়া দেন। কিন্তু এইটা কি বাংলাদেশ যে, শুকনো কথায় চিড়া ভিজবে; তাই আমিও চিড়া ভিজাইতে পারলাম না। একটা কাগজে নাম ঠিকানা লিখে বলে সময় মতো কাগজ চলে যাবে তোমার ঠিকানায়। বুঝলাম ভূয়া কামে আজাইড়া একটা fine খেলাম। ধরা আর কারে বলে!

[মনে হইতেছে, মিলাদ দেয়ার সময় হয়ে গেছে, আল্লাহই জানে কপালে আর কতো ধরা আছে!]