৯ই মে, ২০১৬
কেমন জানি জীবন চলছে, ঠিক
যেন বুঝে উঠতে পারছি না। সময়গুলো একটা মধ্যবয়সী জীবনে আটকে ফেলেছে – ঘুম, কাজ, একঘেয়ে
ট্রেন, বাসা, বাচ্চাকাচ্চা, এলো-মেলো মন না লাগানো কাজ, তন্দ্রা, আবার ঘুম। এর ঠিক
বাইরে বের হতে পারছি না। আজ সকাল বেলায় আকাশ ঘন করে মেঘ জমলো, অফিস ঢুকার পর
জানালার কাঁচ ঘোলা করে ঝমাঝম বৃষ্টি পড়লো। আমার কলিগ বললো এটা নাকি বাকেটিং, আক্ষরিক
বাংলায় যাকে বলে বালতি উল্টে আকাশ থেকে পানি ঢালা – অনেকটা প্রকৃতি ধুয়ে ফেলার জন্য
আকাশ থেকে মেঘগুলোকে পানি করে ছুড়ে ফেলা। আর তারপর আকাশ খালি হয়ে যাওয়ার পর
সূর্যদেবের তেড়েফুঁড়ে বের হওয়া – এই না হলে মেল্বোর্ন।
ছোট বেলায় কচিকাচার আসরে কিছু বই বের হতো সেগুলো পড়তাম,
একেকটা বই জুড়ে থাকতো কিছু গল্প, কিছু কবিতা। আমি কেন জানি কবিতাগুলো আগে পড়তাম (ছোট
বেলায় এমনকি এখনও ছন্দ বেশি ভাল লাগে)।তারপর সেবার তিন গোয়েন্দা, লুকিয়ে নিহারঞ্জনগুপ্তের
গোয়েন্দা কাহিনী (কিরিটি রায়, সুব্রত মোটামুটি মাথায় ঢুকে গিয়েছিল)। তবে প্রথম যে
বইটি পড়ে চোখের পানি ফেলেছিলাম সেটি হলো রবিঠাকুরের কাবুলিওয়ালা। এখনও মনে আছে
ড্রয়িংরুমের খাটের নিচে ঢুকে বোনের পাঠ্যপুস্তকের থেকে কোন এক দুপুরে একমনে ‘কাবুলিওয়ালা’
পড়া শুরু করি; পড়া যখন শেষ হয় তখন বুঝতে পারলাম চোখের জলে বইয়ের পাতা ভিজে গেছে। এইরকম
বৃষ্টিভেজা দিনের দুপুরে আবার কোন একটা বই পড়তে ইচ্ছা করে যেখানে মনের আবেগটা থমকে
না থেকে দমকে দমকে বের হবে, চোখ ভিজবে, মন ভিজবে – যেমনটা প্রকৃতি মেঘ উল্টো করে
ভিজিয়ে দেয় এই শহরটাকে যখন-তখন।