মেলবোর্ন এ এসেই প্রথম যা চোখ ভরে দেখলাম তা হলো একর একর খালি জমি।Avalon Domestic বিমানবন্দর থেকে নেমে বাইরে বেরোতেই সন্ধ্যার ঠান্ডা বাতাস গায়ে লাগল; সন্ধ্যা তখন প্রায় শেষের পথে। একা একা যখন বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম, তখন সামনে থেমে থাকা বাসের কোম্পানির একজন জিজ্ঞেস করে, কোথায় যাব, বাসে যাব কিনা? জানালাম, বন্ধু আসবে গাড়ি নিয়ে। লোকটা হাসি নিয়ে বিদায় নিল। হুট করে মনে হল, সিডনিতে গায়ে পড়ে খোঁজ নিতে কেইবা আসবে!? তাহলে কি মেলবোর্নটা অন্যরকম?
তারপর থেকে অন্যরকমের আমেজ বেশ কয়েক জায়গায় পাওয়া গেল -- বাসে চড়ে, ট্রেনের মানুষের হাসি মুখ দেখে, অফিসের সবার - সেধে পরিচিত হবার উদযোগে এমনি করে বিভিন্ন পরিবেশে। সবচেয়ে ভাল লাগলো মানুষজন এখানে হাসতে পারে, সিডনির মতো মুখ ভার করে থাকে না। হয়তো সিডনিতে কাজের চাপে সবাই চ্যাপ্টা গোলাপের মতো হয়ে থাকে -- এটা কারন হতে পারে।
তবে এখানে এসে আমি একটু বিপদেই পড়ে যাই, কারন বাসে বা ট্রামে উঠার কোন অভ্যাস করতে হয় নাই সিডনিতে থাকাকালীন; বিশেষ করে ট্রামে চড়াটা। ট্রামগুলা এত কাছাকাছি গাড়ির রাস্তা ধরে চলে যে রাস্তায় নামলে গাড়ি, সিগন্যাল সাথে ট্রাম তিনটাই খেয়াল করতে হয়। তবে এখানের রাস্তা বা ফুটপাথগুলো বেশ প্রশস্ত; মোটামুটি হেলেদুলে চলতে খুব একটা সমস্যা হয় না।
আমি এখানে বাসা নিয়েছি পশ্চিমের দিকে, শহর ছাড়িয়ে বলা চলে গ্রামে। এবং এটা যে গ্রাম এ কথাটা স্পষ্ট ভাবে নামের সাথে জুড়ে দেয়া হয়েছে। এমনিতেই মেলবোর্ন খুব শান্ত, তার উপর এ এলাকাটা অতি মাত্রায় শান্ত। প্রথম দিকে তো কানে তালা লেগে যাওয়ার মতো মনে হচ্ছিল। ঢাকা শহরের অতি মাত্রার শব্দ দূষন থেকে ধুম করে অতি নিরব এলাকায় পরে ভিষন অস্বস্তি লাগছিল। সপ্তাহ খানেক যাবার পর এখন ঠিক হয়েছে।
পরিবেশের সাথে ক্ষনেক্ষনে অভিযোজিত হচ্ছি, দেখছি সময়ের বদলে যাওয়া। ভাল লাগছে আবার মনে হচ্ছে কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে আমার পুরোনো হতে থাকা সময় গুলো। সময়ের সাময়িকতায় কোথায় দাঁড়াই, সময়ই বলে দিবে ...
আমি কিছুদিন পরে মেলবোর্নে আসতেছি
উত্তরমুছুন